পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রত্যাহার

পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে রাজনৈতিক মন্তব্য করে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন গাজীপুরের পুবাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আমিরুল ইসলাম। বিষয়টি নিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর তাকে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার (২৮অক্টোবর) গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জাহিদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। একজন এডিসিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ যাচাইবাছাই চলছে, প্রমাণ মিললে পরবর্তীতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা গেছে, যমুনা টেলিভিশনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে জামায়াতে ইসলামী আমির শফিকুর রহমানের একটি বক্তব্যের ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়।

 

সেখানে লেখা ছিল, সনদ স্বাক্ষরের দিনেও জুলাই যোদ্ধাদের আবার আন্দোলনে নামতে হয়েছে, এটা লজ্জাজনক। এই পোস্টের নিচে ওসি আমিরুল ইসলাম মন্তব্য করেন—”আগে গণভোট দরকার, যে স্বাধীনতা বিরোধীরা এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কি না?”

 

মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মন্তব্যটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষও প্রতিক্রিয়া জানায়।

২০ অক্টোবর গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন গাজীপুর নগর জামায়াতের মজলিশে শুরা সদস্য অধ্যাপক মো. আমজাদ হোসেন খান।

 

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ওসি আমিরুল ইসলাম মুরাদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে হেয় করার চেষ্টা করছেন। সরকারি কর্মকর্তা হয়েও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক মন্তব্য করছেন, যা পুলিশ বিধির পরিপন্থী। অভিযোগে আরও বলা হয়, তাকে ব্যক্তিগতভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য, কিন্তু তিনি তা উপেক্ষা করেছেন।

গাজীপুর মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনাটিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল হিসেবে বিবেচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওসি আমিরুলকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়।

 

একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,প্রশাসনের নিরপেক্ষতার প্রশ্নে কোনো আপস নেই। তাই তদন্তের স্বার্থে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গাজীপুর ৫ আসনের মনোনীত প্রার্থী খায়রুল হাসান বলেন, একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা যদি প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, তাহলে জনগণের আস্থা কোথায় থাকবে? আমরা এর শুধু প্রত্যাহার নয়, তার বিচার দাবি করছি।

ঘটনার পর থেকে গাজীপুরজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, পুলিশ কর্মকর্তাদের আচরণবিধি, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কর্মকর্তাদের মত প্রকাশের সীমা নিয়েও উঠেছে নতুন বিতর্ক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here